আপডেট প্রতিদিন, বেবি চক্রবর্ত্তী:- রবিবার কলকাতার কৃষ্ণপদ মেমোরিয়াল হলে আন্তর্জাতিক নয় শব্দের পরমাণু গল্পের তৃতীয় বর্ষের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সকাল এগারোটার সময় বিকেল চারটের সময় পর্যন্ত হল ভর্তি ভারত ও বাংলাদেশের দুই শতাধিক নয় শব্দের পরমাণু গল্পের লেখকদের নিয়ে । এই বছর আনন্দ প্রকাশন থেকেই তৃতীয় বর্ষের নয় শব্দের পরমাণু গল্পের যে সংকলন টি প্রকাশিত হয় তাতে পাঁচ শতাধিক নয় শব্দের গল্প স্থান পেয়েছে সঠিক মানের হওয়ার জন্য । প্রথমেই উদ্বোধনী সঙ্গীত ও প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ।
উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন নবলতা শীল। এই বছর নবলতা শীল ও সোমা কর নয় শব্দের পরমাণু গল্পের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন আর কৃষ্ণা মোদক ও সঞ্জীব ঘোষকে সভাপতি হিসেবে বরণ করেন নয় শব্দের পরমাণু গল্পের উদ্ভাবক ও পঞ্চবান স্রষ্টা সুশান্ত ঘোষ তিনি বলেন পরমাণু গল্প কোনও উক্তি নয় । পৃথিবী জুড়ে বহুদিন অনেক বছর ধরেই কখনও নয় শব্দের মধ্যেই, কখনও দশ, কুড়ি, পঁচিশ, ত্রিশ এখনকি পঞ্চাশ শব্দের গল্পকেও পরমাণু গল্প বলা হয়ে থাকে । আমরা গুগুল সার্চ করলেই এগুলো দেখতে পাই । কিন্তু আমার ভাবনায় পরমাণু গল্প লিখতে গেলে তাকে নয় শব্দের মধ্যেই বৃহত্তর গল্পের সারসংক্ষেপ নিয়ে নামকরণ সহ লিখতে হবে । এটা সত্যিই লেখা ভীষণ কষ্টকর । কিন্তু পরমাণু সংখ্যা বলতে আমরা একক সংখ্যা নয় পর্যন্ত নিতে পারি । দশ থেকেই যুক্ত সংখ্যার প্রকাশ ঘটে । ফলে বৈজ্ঞানিক ভাবে কঠিন হলেও আজ নয় শব্দের মধ্যেই বৃহত্তর গল্পের সারসংক্ষেপ নিয়ে অনেকেই ভীষণ সুন্দর পরমাণু গল্প লিখছেন । ২০২২ সালে আমার কলমে নয় শব্দের পরমাণু গল্পের গ্রন্থ “অ্যাটম_বোম” প্রায় ২৫০ টি পরমাণু গল্প নিয়ে আনন্দ প্রকাশন থেকেই প্রকাশিত হয় । বহু সাহিত্যিক সেই গল্প গ্রন্থ সংগ্রহ করে সেখানকার সূত্র ধরেই তাদের একক অনেক গল্পের গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন । এটা ভীষণ ভাবেই আমাদের গর্বিত করে । আজকের দিনে প্রায় পনের কুড়ি জন সাহিত্যিক এর কলমে তাদের একক নয় শব্দের পরমাণু গল্পের গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে । মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বর্ষীয়ান কবি কমল দে সিকদার, বরুণ চক্রবর্তী, অনুপ দত্ত, তাপস সাহা, বকুল বৈরাগী, মিনতি গোস্বামী, সুলেখা বিশ্বাস এর মতো কবি ও সাহিত্যিকদের সাথে বাংলাদেশের কবি হাসিদা মুন, সাহিত্যিক মুর্শিদ উজ জামান, কবি ও সংগঠক নুরুল শিপার খান সহ আরো বিশিষ্ট কয়েকজন সাহিত্যিক । হলে উপস্থিত সমস্ত লেখকদের বুকে নয় শব্দের পরমাণু গল্পের লোগো খচিত স্টিলের ব্যাচ, মেডেল ও সংকলন দ্বারা মঞ্চে সম্মানিত করা হয় । সমস্ত অতিথিদের বক্তব্য জুড়ে ছিল আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে এই অসাধারণ সাফল্যের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উপর দাঁড়িয়ে ভাবনার ইতিহাস । পরমাণু গল্পের উদ্ভাবক সুশান্ত ঘোষ বলেন নয় শব্দের পরমাণু গল্পের এই ঘরানার সফলতার মূল কারিগর কিন্তু সারা বিশ্বের বহু লেখকদের সক্রিয় কলম । আজ অনেক লেখক অফলাইন ও অনলাইনে তাদের নয় শব্দের মধ্যেই পরমাণু গল্প লিখছেন ।
সমস্ত গুণিজনদের প্রতি উনি ওনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। সঞ্চালক হিসেবে পঞ্চবান কাব্য ঘরানার স্রষ্টা, নয় শব্দের পরমাণু গল্পের উদ্ভাবক সুশান্ত ঘোষ মহাশয়ের সাথেই সহযোগিতা করেন শ্রী বরুণ চক্রবর্তী ও আনন্দ প্রকাশনের কর্ণধার শ্রী নিগমানন্দ মণ্ডল । অনুষ্ঠানে সবার জন্যই চা, জল ও সামান্য টিফিনের ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। পরবর্তী অংশে হলে উপস্থিত বিভিন্ন সৃজনশীল ছোট ছোট লিটল ম্যাগাজিন সাহিত্য পত্রিকা’কে উৎসাহিত করার জন্য প্রায় পঞ্চাশ জনের অধিক সাহিত্য পত্রিকা’র সম্পাদক ও সম্পাদিকাকে আমন্ত্রণ করে বিনোদন সাহিত্য পত্রিকা’র ব্যানারে তাদের সম্মানিত করেন উত্তরীয় ও স্মারক সহ বিনোদন সাহিত্য পত্রিকা’র সম্পাদক হিসেবে কবি সাহিত্যিক ও সংগঠক সুশান্ত ঘোষ মহাশয় । এটা একটা সুন্দর প্রয়াস বলে বর্ননা করেন অনেকেই । আজ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত আবৃত্তি শিল্পী সুমন মুখোপাধ্যায়, তাপসী ঘোষ, ঝুমঝুম ব্যানার্জী, নন্দিনী লাহা, রঞ্জনা কর্মকারকেও সম্মানিত করা হয় পত্রিকা’র তরফ থেকে । তাঁদের অসাধারণ আবৃত্তি মুগ্ধ করে সবাইকেই। একটি সুন্দর সুস্থ সাহিত্য ও সংস্কৃতির সৃজনশীল অনুষ্ঠানের উপহার দেবার জন্য সবাই আন্তরিক আনন্দ উপভোগ করেন ।