আপডেট প্রতিদিন, বেবি চক্রবর্ত্তী, কলকাতা :-বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যে জায়গাতে দল বেঁধে কিছু সংখ্যক মানুষ নিয়মিত নামাজ পড়ে সেটা ওয়াকফ সম্পত্তি হয়ে যায় । কেন্দ্র সরকারের আনা ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় কলকাতার রাণী রাসমনিতে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকা প্রতিবাদ সভায় শনিবার ভাষণে এমনই মন্তব্য করেছেন কল্যাণ ।রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ সেই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিং এক্স- হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন । পালটা তিনি মন্তব্য করেছেন,সেই হিসাবে কল্যাণ ব্যানার্জির বাড়িও ওয়াকফ সম্পত্তি হতে হয় । ভিডিওতে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি এদিন বলেন যে ‘আপনি যেখানেই নামাজ পড়বেন সেই জায়গাটা ওয়াকফ সম্পত্তি বলে চিহ্নিত হবে। যেকোনো একটা জায়গায় যদি কুড়ি জন, ২৫ জন, ১৫ জন, পাঁচজন নিয়মিত নামাজ পড়ে সেটা ওয়াকফ পপার্টি বলে ডিড করা হবে ।’প্রতিক্রিয়ায় দিলীপ ঘোষ কল্যাণকে কটাক্ষ করে লিখেছেন,’যদি ওয়াকফ আইনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা হয়, তাহলে তারা যেখানে নামাজ আদায় করে সেই জায়গা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি হয়ে যাবে। এর মধ্যে থাকতে পারে বাজার, স্টেশন, খেলার মাঠ, বাস স্ট্যান্ড, ট্রেনের বগি, বিমানবন্দর,নবান্ন (রাজ্য প্রশাসনিক ভবন), কল্যাণ ব্যানার্জির বাড়ি, এমনকি তিলজলায় টিএমসি পার্টি অফিস – মূলত, এই জাতীয় প্রতিটি স্থানকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে ঘোষণা করা যেতে পারে।’

ওয়াকফ সংশোধনী বিল, কল্যাণ ব্যানার্জি

এছাড়াও কংগ্রেসের সৃষ্টি ওয়াকফ আইনকে অনেকেই বিপজ্জনক বলে মনে করেন । ইসলাম প্রীতি ও হিন্দু বিদ্বেষী মানসিকতা থেকেই জহরলাল নেহেরু পরিকল্পিতভাবে এই আইন এনেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে । এই আইন অনুযায়ী ওয়াকফ বোর্ডকে অপরিসীম ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে কংগ্রেস । ১৯৫৫ এবং কংগ্রেস ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ২০১৩ সালে, ওয়াকফকে আরও শক্তিশালী করার জন্য ওয়াকফ আইন সংশোধন করা হয়েছিল। সেই আইন অনুযায়ী ওয়াকফ বোর্ড যেকোন সম্পত্তির উপর দাবি করতে পারে এবং নিজের দাবি প্রমাণ করা জমির মালিকের উপর বর্তায় । তামিলনাড়ুর একটা ১৪০০ বছরের প্রাচীন একটা হিন্দু মন্দিরসহ আস্ত হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামকেই নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করেছে তামিলনাড়ু ওয়াকফ বোর্ড । বিহারের নব্বই শতাংশ হিন্দু অধ্যুষিত একটা গ্রামও নিজের সম্পত্তি বলে দাবি করে এক মাসের মধ্যে গ্রাম খালি করার নির্দেশ দেয় বিহার ওয়াকফ বোর্ড ।

ওয়াকফ বোর্ডের এই অপরিসীম ক্ষমতা কেড়ে নিতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল এনেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার । তবে কংগ্রেস,বামপন্থী, তৃণমূল কংগ্রেস ও বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্র সরকারকে । বিশেষ করে মমতা ব্যানার্জির দল ওয়াকফ সংশোধনী বিলের প্রবল বিরোধিতা করছে । আর এই বিলের বিরোধিতার নিরিখে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি কার্যত রোল মডেল হয়ে উঠেছেন ।