আপডেট প্রতিদিন, বেবি চক্রবর্ত্তী:- মনু ভাকের(Manu Bhaker) প্যারিস অলিম্পিকে ইতিহাস রচনা করেছেন দুটি পদক জয় করে। ভারতবর্ষে, ২২ বছর বয়সী মনু, প্রথম মহিলা শুটার যিনি অলিম্পিকে পদক জয় করেছেন। প্রাক্তন ভারতীয় শুটার যশপাল রানার মনুকে গড়ে তোলার পেছনে অনেক অবদান আছে। মনু অলিম্পিকে যখন দুটি পদক জয় করছেন রানা তখন গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন। ভারতের এই নতুন নক্ষত্র অলিম্পিকে তৃতীয় পদক অল্পের জন্য জিততে পারলেন না। ২৫ মিটার পিস্তল শুটিংয়ে এক পয়েন্ট পেছনে থেকে তিনি চতুর্থ স্থান দখল করেন। মনুর প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে যাওয়ার পর এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যশপাল রানা বলেন, “আমি মনু কে তৈরি করার কৃতিত্ব দাবি করছি না। অনেক মানুষের অবদান আছে ওঁর তারকা হওয়ার পেছনে যেমন সাই, রাজ্য সরকার ইত্যাদি। মনু আমার সাহায্য ছাড়াই স্বয়ংসম্পূর্ণ এক ক্রীড়াবিদ। তাঁকে এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছিল আমরা কেউ মাঠে না থাকলেও কিছু এসে যেত না। আমি ভোপালে ওর ট্রায়াল গুলো দেখেছি। আমার অধিকার ছিল তার পাশে বসে উপদেশ দেওয়ার কিন্তু আমি বসিনি। আমি গ্যালারিতেই ছিলাম। আমি ট্রায়ালে একবারও নিজেকে জড়াইনি। কিন্তু অলিম্পিক একটা বড় ব্যাপার। বাচ্চাদের অনেক সময় এরকম বড় আসরে পিছন থেকে একটা ছোট্ট ধাক্কার প্রয়োজন হয়। আমি সেই কাজটাই করেছি। আমি এখানে উপস্থিত থাকতে পেরেছি পি টি ঊষার জন্য।”
রানা আরো বললেন শুধু টেকনিক নয় মানসিক জোড় আনাটাও একটা কাজ। “এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের নতুন করে শুটিং শেখাতে হবে না তাঁর আমাদের থেকে এ ব্যাপারে অনেক এগিয়ে। এদের দরকার কিছু সূক্ষ্ম পরামর্শ কারণ ছোট ছোট ভুল গুলোই বড় আসরে পার্থক্য গড়ে দেয়। যখন আমি খেলতাম আমি কোথাও যেতে পারতাম না দিনে ৭-৮ ঘন্টা অনুশীলন করতাম। আমার কোন ফিজিও ছিল না, ছিলনা কোন সামাজিক জীবন। কিন্তু আমি এদের শিখিয়েছি, একটা সুন্দর সামাজিক জীবন গড়ে তুলতে যেখানে বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনরা থাকবে। তা নাহলে এরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়বে এবং এদের থেকে ভালো ফল পাওয়া যাবে না।” যশপাল রানাকে প্রশ্ন করা হয় মনু আর কখনো সাধারণ মানুষের মত জীবন যাপন করতে পারবে কিনা। উত্তরে রানা বলেন, “না তার সম্ভব নয়। শচীন টেন্ডুলকার কখনো আমজনতার মত রাস্তায় হাঁটতে পারেন ? কিন্তু আমি হাঁটতে পারবো কারণ আমাকে কেউ চেনে না। আমি এইরকম জীবনেই খুশি।”
প্রথম পদক জয় করার পরে মনু সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে ভগবত গীতা পাঠ করা তার মানসিকতা গঠনে প্রচুর সাহায্য করেছে। রানা বলেন গীতা পড়ে সত্যিই ওঁর অনেক উপকার হয়েছে। রানা যোগ করেন, “মনু একটা যুদ্ধে নামছে। সেখানে তাঁকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হবে একা একা। মনুর বাবা-মা পর্যন্ত এখানে আসেননি কারণ যদি উল্টো ফল হতো তাহলে সবাই বাবা-মাকেই দায়ী করতো। আমি সেই দায় নিতে পারি কিন্তু ওঁর বাবা মারা নিতে পারবেন না।”
তাহলে কি রানা-ভাকের ভারতের কৃষ্ণ অর্জুন জুটি?
যশপাল রানা বলেন, “আমি কৃষ্ণের ভক্ত আর ওকে অর্জুন বলাই যায়।”