আপডেট প্রতিদিন, বেবি চক্রবর্তী:- রাজ্যসভায় ৪ সদস্যের অবসর গ্রহণের ফলে বিজেপির শক্তি নেমে গিয়ে ৮৬ তে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এনডিএ(NDA) ১০১ এ। এর ফলে রাজ্যসভায় এনডিএ সংখ্যালঘু হয়ে গেল।
গত শনিবার সোনাল মান সিং, মহেশ জেঠমালানি, রাকেশ সিনহা এবং রাম শাকাল অবসর নিয়েছেন। এরা প্রত্যেকেই রাষ্ট্রপতি মনোনীত হলেও নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সমর্থন করতেন। এদের অবসর গ্রহণের ফলে রাজ্যসভায় ২৪৫ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ১১৩ র অনেক নিচে চলে যায় এনডিএ। যদিও রাজ্যসভায় বর্তমান শক্তি এখন ২২৫। লোকসভায় বিজেপি ২৪০ এ আটকে গেলেও চন্দ্রবাবু নাইডু এবং নীতিশ কুমারের সহযোগিতায় ২৯৩এ পৌঁছে গেছে এনডিএ। কিন্তু রাজ্যসভায় এই দুই দল সাহায্য করার পরেও এনডিএ সেখানে সংখ্যালঘু।অন্যদিকে রাজ্যসভায় বিরোধী ইন্ডিয়া ব্লকের আসন সংখ্যা ৮৭। এরমধ্যে বাংলা থেকে তৃণমূলের ১৩, কংগ্রেসের ২৬। এবং দিল্লি ও তামিলনাড়ুতে আপ ও ডি এম কের আসন সংখ্যা ১০। তবে ইন্ডিয়া ব্লক এবং এনডিএ জোট ছাড়াও তেলেঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এর বিআরএস এবং নির্দল সদস্যরা রয়েছেন। এরমধ্যে বিআরএস এর সদস্য সংখ্যা চার। তাহলে বিজেপি কাদের উপর নির্ভর করছে? এই অবস্থায় রাজ্যসভায় বিজেপিকে কোন বিল পাশ করাতে গেলে একাধিক এনডিএ ভুক্ত নয় এমন দলের উপর নির্ভর করতে হবে। তামিলনাড়ুতে বিজেপির প্রাক্তন সহযোগী এআইডিএমকে এবং অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগমোহন রেড্ডির ওয়াই এস আর কংগ্রেসের ওপর নির্ভর করতে হবে।
ওয়াই এস আর কংগ্রেস এবং এআইডি ডিএমকের আসন সংখ্যা যথাক্রমে ১১ এবং ৪। জানা গেছে বিজেপির যখন প্রয়োজন হয়েছে এই দুটো দল তাদেরকে ভোট দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকের একাংশ মনে করছেন রাজ্যসভায় ইস্যু ভিত্তিক সমর্থন দেওয়া ওয়াইএস আর কংগ্রেসের ১১ টি ভোট বিজেপির জন্য নিশ্চিত। ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক বিজেপিকে সমর্থন দিলেও সম্প্রতি তারা বিজেপির কাঠে রাজ্য পাঠ হারানোয় তারা সমর্থন দেবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্যসভায় এখন ১২ জন মনোনীত সদস্য রয়েছেন। তাদেরকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করলেও তাঁরা সাধারণভাবে যে সরকারের সময় মনোনীত হন। সেই সরকারকেই সমর্থন করে থাকেন। রাজ্যসভায় এই মুহূর্তে কুড়িটি আসন খালি রয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জন নির্বাচিত হবেন। তারমধ্যে মহারাষ্ট্র, অসম এবং বিহার থেকে দুইজন করে, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ত্রিপুরা এবং তেলেঙ্গানা থেকে একজন করে রাজ্যসভায় সদস্য আসবেন। এই আসন গুলোর মধ্যে বিজেপি একাই নটি আসন পেতে পারে। কারণ অসম, রাজস্থান, বিহার, ত্রিপুরা এবং মধ্যপ্রদেশে রয়েছে বিজেপি। এখন মহারাষ্ট্রের ভোট যদি তারা একত্রিত করতে পারে তাহলে নটি আসন বিজেপি পেতে পারে। তেলেঙ্গানায় একটি এবং জম্মু-কাশ্মীরে চারটি আসন খালি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জম্মু-কাশ্মীরের ভোট ৩০ শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হয়ে গেলে সেখানকার আসনগুলো পূরণ হবে। এবং তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় সেখানকার বর্তমানে খালি থাকা একটা আসন তাদের দখলেই যাবে বলে ধরে নেওয়া হয়।এছাড়া বিজেপি মনোনীত সংসদ এবং ওয়াই এস আর কংগ্রেসের ভোট পেলে তা সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে বেশি হয়ে যাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।