আপডেট প্রতিদিন, বেবি চক্রবর্তী, কলকাতা:- সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের সিভিকদের নিয়ে তথ্য দিতে রাজ্যজুড়ে শুরু করে দেওয়া হয়েছে সিভিক সুমারির কাজ। কোন জেলায় ঠিক কতজন সিভিক রয়েছেন, তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া কীভাবে চলেছে, বয়স ও উচ্চতার ক্ষেত্রে কী নিয়ম মানা হয়েছে, এই সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তৈরির কাজ রাজ্য পুলিশ শুরু করে দিয়েছে। বিভিন্ন জেলার রিপোর্ট পুলিশ ডিরেক্টরেটে জমা পড়ার পর সমস্ত নথি পর্যালোচনা করে দেখা হবে। সেখানে কোনও ফাঁক থাকলে, তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের কাজ শুরু হয়। রাজ্য পুলিশে এখন সিভিকের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪০ হাজারের কাছাকাছি।খাতায়কলমে সহযোগী বলা হলেও, জেলা পুলিশের থানা-ফাঁড়ির কাজ চালানোর ক্ষেত্রে তাঁরাই বড় ভরসা। পুলিশ কর্মীর সংখ্যা কম থাকায় অপরাধের ঘটনাস্থল পাহারা দেওয়া বা তদন্তের কাজে তাঁদের কাজে লাগাতে বাধ্য হচ্ছেন জেলার সিনিয়র অফিসাররা। হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটিতে লাঠি হাতে তাঁদের নামানো হচ্ছে অভিযোগ এসেছে বিভিন্নমহল থেকে।

এই নিয়ে বারবার বিতর্ক হয়েছে। সার্ভিস বুক না থাকায় শাস্তির ব্যবস্থাও নেই তাঁদের। সিভিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনও পদ্ধতি নেই। বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররাই জেলাস্তরে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁদের নিয়োগ করে থাকেন। মাধ্যমিক পাস যে কোনও ছেলেমেয়ে সিভিকের চাকরিতে আবেদনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হন। নিয়োগের সময় নামমাত্র ইন্টারভিউ নেওয়া হয় সিভিকের প্রার্থীদের। তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়স সীমা বা উচ্চতা বেঁধে দেওয়া হয়নি। যে কারণে পঁয়ত্রিশ উর্ধ্ব অনেকে তো বটেই, এমনকী খর্বকায় হয়েও অনায়াসে সিভিকে চাকরি করছেন।রাজ্য পুলিশের সূত্র বলছে, বিভিন্ন জেলার এক একটি থানায় ৪০০ থেকে ৫০০ জন সিভিক রয়েছেন।দক্ষিণবঙ্গের এমন কিছু থানা রয়েছে যেখানে সিভিকের সংখ্যা তার চাইতেও বেশি। কমপক্ষে ৩০০ সিভিক মিলবে রাজ্য পুলিশের যে কোনও থানায় গেলেই। অভিযোগ তাঁদের অনেকেই ডিউটি করেন না। অথচ মাসের পর মাস তাঁরা বেতন পেয়ে যান। অভিযোগ, সিভিকদের একটা বড় অংশ রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। প্রতিটি জেলা থেকে কোটি কোটি টাকা বিল আসছে রাজ্যের অর্থ দফতরে যা মেটাতে রীতিমতো হিমশিম অবস্থা প্রশাসনের।