আপডেট প্রতিদিন, বেবি চক্রবর্ত্তীঃ- প্রচলিত ছিল মহারাজ বীরভদ্র নির্ধারিত দিনে শিকারের জন্য যাত্রা করলেন। অনবদ্য শিকারি হিসাবে তিনি সর্বজন বিদিত। কিছুকাল আগেও তিনি শিকারে গিয়েছিলেন। তা ছিল নেহাতই নিজের দক্ষতাকে শাণিত করার প্রয়োজনে। কিন্তু এবারে বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় আর প্রজাদের মঙ্গলসাধনের সৎ ইচ্ছায় তিনি তার রাজধানী ‘বসুন্ধরা’ পুরনগরীকে যথাসম্ভব আধুনিক করে তুলেছেন। তার মানসনগরী বাস্তবায়িত করার জন্য তিনি যেমন তার প্রজাদের কাছ থেকে সম্ভ্রম ও আনুগত্য আদায় করেছেন, তেমনই ভিনদেশী রাজন্যবর্গের ঈর্ষাও তাকে আমোদিত করেছে। রাজধানী ব্যতীত রাজ্যব্যাপী তার নগরায়নের পরিকল্পনাও কারও অজানা নয়। এ হেন রাজ্যে খোদ রাজধানীতে অযাচিত এক উপদ্রবের সূত্রপাত হয়েছে, যাতে মহারাজ বীরভদ্রের গর্ব আহত। এরপর পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত। একদল ঘোড়সওয়ার যাযাবর ব্যবসায়ী এক দেশ থেকে আরেক দেশের উদ্দেশ্যে চলেছে। সঙ্গে তাদের পণ্যসামগ্রী। এখন যে পথ দিয়ে তারা চলছে সেই পথ খুব রুক্ষ। জলের আভাষটুকুও নেই। পথে তাদের নজরে এলো এক মৃত নগরের ভগ্ন তোরণদ্বার। তার ফলকে উৎকীর্ণ ‘বসুন্ধরা’।
‘বীরভোগ্যা বসুন্ধরা’র প্রকৃত অর্থ একটি শ্রেষ্ঠতম বা মূল্যবান বসুন্ধরা বা মানুষ যার মধ্যে বীরত্ব বা ধৈর্য উপস্থিত। বীরভোগ্যা বসুন্ধরা ব্যক্তিগত, মানসিক বা শারীরিক স্বপ্নসমূহ অর্জন করার জন্য দৃড়তার সাথে চালিত হয়ে থাকেন। ‘বীরভোগ্য বসুন্ধরা’ -এটি শ্রীমদ্ভগবদ গীতা থেকে নেওয়া হয়েছে।এটি শ্রীমদ্ভগবদ গীতার অধ্যায় ২ (দুই) শ্লোক ৩৭ -এ এর একটি অন্তর্নিহিত উল্লেখ রয়েছে।সেখানে বলা হয়েছে নিহত তুমি স্বর্গ জয় করবে, জয়ী তুমি পৃথিবী উপভোগ করবে; তাই হে কুন্তীর পুত্র, যুদ্ধের সংকল্প করে উঠুন। তখনকার দিনে দেশপ্রেমিকদের কাছে ‘আনন্দমঠ’ ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘স্বরাজ গীতা’। ‘আনন্দমঠ’ গ্রন্থে ঋষি বঙ্কিম দেশাত্মবোধকে আধ্যাত্মিক বোধে উন্নীত করেছিলেন।‘আনন্দমঠ’- এর সন্ন্যাসী-সন্তানদের কাছে দেশই হল তাদের মা, দেশই তাদের উপাস্য দেবী, মা দুর্গা। তাই ভবানন্দ সন্ন্যাসীর মুখে আমরা শুনতে পাই, “আমরা দেশ ছাড়া অন্য মা মানি না- জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী। জন্মভূমিই জননী; আমাদের মা নাই, বাপ নাই, ভাই নাই, বন্ধু নাই, স্ত্রী নাই, পুত্র নাই, ঘর নাই, বাড়ি নাই, তিনিই আমাদের দুর্গা, সর্বশক্তির আধার। তাই বলি তুমি যে হও, ভারতবাসী হইলেই মায়ের সন্তান, আমার ভাই; আর তুমি আমি সমগ্র ভারতবাসী একই জাতি।” বঙ্কিমচন্দ্র তাই দেশপ্রেমকে ধর্মে এবং ধর্মকে দেশপ্রেমে রূপান্তরিত করেছেন।দেশাত্মবোধই যে শ্রেষ্ঠ ধর্ম তা তিনি পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছেন। তার ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ উপন্যাসে ‘আমার দুর্গোৎসব’ খন্ডে সর্বপ্রথম তিনি জন্মভূমির মাতৃরূপ দর্শন করান। আনন্দমঠে এরপর ব্রহ্মচারী সত্যানন্দ ঠাকুর মহেন্দ্রকে মায়ের তিনটি মূর্তি দর্শন করান। এক, মা যাহা ছিলেন। দুই, মা যাহা হইয়াছেন। তিন, মা যাহা হইবেন। অর্থাৎ দেশমাতৃকার অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ রূপ — জগদ্ধাত্রী, কালী এবং দুর্গা। অতীতে ভারতমাতা শস্য-শ্যামলা, সম্পদশালীনি, কলা, বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় শ্রেষ্ঠ ছিলেন। তাই তিনি ছিলেন জগদ্ধাত্রী — গৌরবোজ্জ্বল অতীত ভারতবর্ষের প্রতীক। আর তৎকালীন পরাধীন ভারত এবং বর্তমানের দুর্দশাগ্রস্ত ভারত হৃতসর্বস্বা, নগ্নিকা, রুধির সিক্তা, কঙ্কাল-মালিনী মা কালী। আর ভবিষ্যতের ভারতবর্ষ হলেন মা দুর্গা। বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষায় সেই মা দুর্গার বর্ণনা এমনতরো, “মহেন্দ্র দেখিলেন এক মর্মর প্রস্তর নির্মিত প্রশস্ত মন্দির মধ্যে সুবর্ণ নির্মিতা দশভূজা প্রতিমা নবারুণ কিরণে জ্যোতির্ময়ী হইয়া হাসিতেছেন। দশ ভুজ দশদিকে প্রসারিত, তাহাতে নানা আয়ুধ রূপে নানা শক্তি শোভিত। পদতলে শত্রু বিমর্দিত, পদাশ্রিত বীর কেশরী শত্রু নিপীড়নে নিযুক্ত। দিগভুজা নানা প্রহরণ ধারিনী, শত্রু বিমর্দিনি, বীরেন্দ্র পৃষ্ঠ বিহারিনী, দক্ষিণে লক্ষ্মী ভাগ্য রূপিনি, বামে বাণী বিদ্যা বিজ্ঞানদায়িনী সরস্বতী, সঙ্গে বলরূপি কার্তিকেয়, কার্যসিদ্ধি রূপি গণেশ।” বঙ্কিমচন্দ্রের কল্পনায় এটিই হল ভবিষ্যৎ ভারতবর্ষের ছবি — শক্তি রূপিনি দুর্গতি নাশিনী মা দুর্গা। আর এই ছবি বাস্তবায়িত করিবার মানসেই হিন্দুরাষ্ট্রবাদীরা ধর্ম সংরক্ষণ পূর্বক পরম বৈভবশালী হিন্দুরাষ্ট্র পুনর্নির্মাণের জন্য ইশ্বরের নিকট বীরব্রত চাইছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে এটিই হিন্দুরাষ্ট্রবাদের মূল কথা। অতএব একথা প্রতীয়মান হচ্ছে যে, মা দুর্গাই ভারত মাতা, ভারত-ভারতী। এবং দেশসেবা, দেশাত্মবোধ, আধ্যাত্মিকতা, ভারত-আত্মা সমার্থক এবং সমসূত্রে গ্রথিত। ঠিক যেমন রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, অরবিন্দ, প্রণবানন্দ, সুভাষচন্দ্র প্রভৃতি ভারত মনীষী তথা বাংলার বীর সন্তানদের চিন্তন -মনন -কথনের মূল সুর একই ঐক্যতানে ঝংকৃত। আর তা হল রাষ্ট্রসাধনা, মাতৃসাধনা, ধর্ম, দেশপ্রেম, আধ্যাত্ম সাধনা। প্রকৃতপক্ষে হিন্দুরাষ্ট্রবাদীরা ভারত-মনীষার এই স্বপ্নকে সাকার রূপ প্রদানের জন্য রাষ্ট্র সাধনা করে চলেছেন।
পরাধীন ভারতকে শৃঙ্খলা মুক্তির সংগ্রামে আত্মনিবেদিত মনীষীদের মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দ সর্বাগ্রগণ্য এবং পথিকৃৎ। তাঁরই স্বদেশ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে স্বদেশী আন্দোলনের সেই যুগে হাজার হাজার যুবক, নর-নারী ভারত মাতার মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বিপ্লবীদের যেকোনো ঘাঁটিতে তল্লাশির সময়ে স্বামীজীর লেখা কোন না কোন বই পাওয়া যেত। বিপ্লবীদের শিয়রে টাঙানো থাকতো ‘সাইক্লোনিক হিন্দু monk’-এর ছবি আর সেখানে লেখা থাকতো “উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত প্রাপ্য বরান নিবোধত।” ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলতেন বীরের মতো এগিয়ে যাও, সিদ্ধিলাভ আমরা করবই। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের নেতা। তিনি ধর্ম ও কর্মের দ্বারা এমন এক সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন যারা দেশমাতার শৃঙ্খল মোচনে প্রাণ বিসর্জন দিতেও প্রস্তুত থাকবেন। তিনি বলেছিলেন, “জন্ম হইতেই তোমরা মায়ের জন্য বলি প্রদত্ত।” প্রকৃতপক্ষে স্বামী বিবেকানন্দের মধ্যে আমরা আনন্দমঠের সন্ন্যাসী ভবানন্দের প্রতিমূর্তি দেখতে পাই। ভবানন্দের সুরে সুর মিলিয়ে তিনি বলেছেন, “অন্য সব দেবতাকে ভুলে আগামী পঞ্চাশ বছর ভারতমাতাই আমাদের আরাধ্যা দেবী হউন।”
সেইসময় মুক্তি আন্দোলনের নেতারাও স্বামীজীর কাছে যাতায়াত করতেন। কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে দলে দলে তারা শ্রীমা সারদা দেবীকে প্রণাম করতে আসতেন। শ্রীমা বলেছেন, “সকলেই বলছে তারা স্বামীজীর শিষ্য।” তাঁর গুরুদেব শ্রীরামকৃষ্ণের দেওয়া মন্ত্র “শিব জ্ঞানে জীব সেবা“-র আদর্শ রূপায়িত করবার জন্য তিনি সন্ন্যাসী সঙ্ঘের সূচনা করেন। রামকৃষ্ণ মঠের সন্ন্যাসীদের একমাত্র ব্রত মানুষের সেবা যা আজও প্রবহমান। রামকৃষ্ণ মিশনের সাথে বিপ্লবীদের যোগাযোগ ছিল একথা ব্রিটিশ সরকারের গোয়েন্দা রিপোর্টে পাওয়া যায়। স্বামীজীর লেখা ‘বর্তমান ভারত’ রচনাতে সমাজ, রাষ্ট্র ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা আমরা দেখতে পাই। স্বামীজী দেশ বলতে দেশের মানুষকে বুঝতেন। ভারতমাতার সর্বদক্ষিণ প্রান্ত কন্যাকুমারীর শিলাখণ্ডের উপর উপবেশন করে তিনদিন ধরে স্বামীজি মা ভগবতীর অখন্ড সাধনায় নিমগ্ন হলেন। মা ভগবতী অর্থাৎ মা দুর্গা। ভারত মাতার মানচিত্র উত্তর থেকে দক্ষিণ এবং পূর্ব থেকে পশ্চিম তার ধ্যান নেত্রে চিত্রপটের মতো উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো। তার মানস চোখে ধরা দিল ‘নতুন ভারত। অর্থাৎ স্বামীজীর ভাবনাতেও সেই মা দুর্গাই ভারতমাতা, স্বদেশ মাতা, ভারত ভূমি। হিন্দুত্ববাদীদের নিকট তাই স্বামী বিবেকানন্দ আদর্শ পুরুষ।
এখানে একজন মহাপুরুষের কথা বিবৃত করব যাকে অগ্নিপুরুষ, শক্তি পুরুষ, সিদ্ধপুরুষ বা আধ্যাত্ম পুরুষ — কোন বিশেষণেই পূর্ণরূপে ব্যক্ত করা যায় না। তিনি ঋষি অরবিন্দ, পূর্বাশ্রমের নাম শ্রী অরবিন্দ ঘোষ। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীনই ভারত আত্মার মুক্তির জন্য সশস্ত্র বিপ্লবের কথা বলে ভাষণ দেন। আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও সরকারি চাকরি প্রত্যাখ্যান করে তিনি বরদা কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। বরদা কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীনই বিপ্লবের কাজ শুরু করেন। পরে ভগিনী নিবেদিতার সহায়তায় কলকাতাতে গুপ্ত সমিতি স্থাপন করেন। পরে ব্যারিস্টার প্রমথনাথ মিত্রর অনুশীলন সমিতির সহ সভাপতি হন। ভারত মাতাকে শৃঙ্খলা মুক্ত করার কাজকে তিনি ঐশ্বরিক কাজ বলে মনে করতেন। তিনি আরো বলতেন মাতৃভূমির মুক্তিসংগ্রামের জন্য চাই দেশপ্রেম, আত্মবিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়। বন্দেমাতরম পত্রিকার সম্পাদক থাকাকালীন তিনি ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের কথা বলেন। ফলে ইংরেজ সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে। মৃন্ময়ী মাতৃভূমিকে তিনি চিন্ময়ী মাতৃরূপে দেখতেন। তার কাছে দেশমাতাই ছিল দেবি দুর্গা। রাষ্ট্র সাধনাকে তিনি শক্তিপূজা, দেশমাতৃকার পূজা মনে করতেন। সত্যি বলতে কি ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের কল্পিতচরিত্র সন্ন্যাসী নেতা, সন্তান দলের পুরোধা, মঠ অধিপতি, দেশভক্ত সত্যানন্দ ব্রহ্মচারীর জীবনবেদের বাস্তব রূপ আমরা শ্রীঅরবিন্দের জীবনীতে প্রকটভাবে দেখতে পাই। পাঠকগণ যারা শ্রীঅরবিন্দের সেই ছোট্ট পুস্তিকা ‘ভবানী মন্দির’ পাঠ করেছেন তারা সবাই আমার সাথে একমত হবেন। স্বদেশপ্রেম কোন উচ্চতায় পৌঁছালে তা অধ্যাত্ম-সাধনার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতে পারে তা এই ছোট্ট পুস্তিকা না পড়লে বোঝা যাবে না। এই পুস্তিকাটিতে তিনি একটি মন্দির নির্মাণের কথা বলেছেন, যে মন্দিরের দেবী হবেন দেশ জননী মাতৃরূপা ভবানী ভারতী। ভবানী হলেন মা ভারত মাতা — যিনি প্রেম, জ্ঞান, ত্যাগ ও দয়ার প্রতিমূর্তি। নিজের সমগ্র সত্তার মধ্যে দেশমাতা মাতৃরূপা দেবী দুর্গা মিলেমিশে একাকার নাহলে এ পুস্তিকা লেখা যায় না। শুধুমাত্র এই বোধ জন্মালেই কেউ দেশের জন্য প্রাণ দিতে পারেন। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে বালক ক্ষুদিরামের মত নির্ভীক কণ্ঠে বলতে পারেন, “আমি অক্ষয়,আমি অব্যয়, আমাকে মারে কার সাধ্য!” ইতিহাসের জঞ্জাল যে ক্ষুদিরামের ফাঁসি হয় এবং অরবিন্দ সহ ৩৬ জন বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এক বৎসরের অধিক কাল বন্দি দশা কাটানোর সময় অরবিন্দ মহাজাগতিক চৈতন্য প্রভায় প্রভাবিত হন। তিনি ধর্ম ও দর্শন নানা বিষয়ে লিখতে থাকেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রখর যুক্তিবাদী সওয়ালের ফলে অরবিন্দ সহ সতের জন বিপ্লবী মুক্তি লাভ করেন। বিপ্লবের তীর্থভূমি বাংলায় তার শেষ আশ্রয় উত্তরপাড়া। যেখান থেকে তিনি উচ্চমার্গের আধ্যাত্মিকতা ও দেশপ্রেম সম্বলিত পুস্তিকা ‘উত্তরপাড়া অভিভাষণ’ স্বাধীনতা সাধকদের হাতে অর্পণ করে পন্ডিচেরি চলে যান এবং অখন্ড আধ্যাত্মিক সাধনায় মনোনিবেশ করেন। অরবিন্দ ঘোষ হয়ে ওঠেন মহাঋষি শ্রী অরবিন্দ। স্বামীজি বলছেন ..’বীরভোগ্যা বসুন্ধরা’ — বীর্য প্রকাশ কর, সাম- দান- ভেদ- দণ্ড-নীতি প্রকাশ কর, পৃথিবী ভোগ কর, তবে তুমি ধার্মিক। আর ঝাঁটা-লাথি খেয়ে চুপটি ক’রে ঘৃণিত-জীবন যাপন করলে ইহকালেও নরক-ভোগ, পরলোকেও তাই। এইটি শাস্ত্রের মত। সত্য, সত্য, পরম সত্য-স্বধর্ম কর হে বাপু! অন্যায় ক’রো না, অত্যাচার ক’রো না, যথাসাধ্য পরোপকার করো। কিন্তু অন্যায় সহ্য করা পাপ, গৃহস্থের পক্ষে; তৎক্ষণাৎ প্রতিবিধান করতে চেষ্টা করতে হবে।” … এই ২০২৪ সালে অগষ্টে এসে বাংলাদেশের যে ভয়াবহ রূপ দেখলাম। তা বাস্তবিক রূপায়িত স্বামীজির শক্তিময়ী কথা ঠিক খুরের মতই ধারালো সর্বদা যেন অক্ষরে অক্ষরে প্রজ্বলিত।